আখ থেকে উৎপাদিত অপরিশোধিত চিনির অপর নামই হল 'লাল চিনি' (Brown Sugar)। উৎপাদনের পর অপরিশোধিত থাকে বলে লাল চিনিতে আখের সব খনিজ উপাদান যেমনঃ ম্যাগনেসিয়াম, শর্করা, ক্যালসিয়াম, পটাশিয়াম, লৌহ, জিঙ্ক ইত্যাদি থেকে যায়। অপর দিকে লাল চিনিকে পরিশোধিত করে সাদা করার জন্য ক্ষতিকর রাসায়নিক উপাদান মেশানো হয়। আর সেই কারণেই পরিশোধনের সময় প্রোটিন, মিনারেল, ভিটামিন, এনজাইম সহ অন্যান্য উপকারি পুষ্টি উপাদান দূর হয়ে যায়।
চলুন জেনে নেই লাল চিনির (Brown Sugar) কিছু উপকারিতা ও গুণাগুণ -
১) প্রচুর মাত্রায় ক্যালসিয়াম থাকার কারণে লাল চিনি খেলে হাড় শক্ত হয়। দাঁতের ক্যাভিটি এবং ব্যাকটেরিয়াল ইনফেকশন হওয়ার আশঙ্কাও দূর হয়।
২) আখের অ্যান্টি-অক্সিডেন্ট ক্যান্সার প্রতিরোধ করে এবং শরীরের ভিতরে উপস্থিত ক্ষতিকর টক্সিক উপাদান বের করে দেয়।
৩) লিভার সুস্থ রাখে।
৪) জন্ডিসের প্রকোপ কমায়।
৫) কোষ্ঠ কাঠিন্য দূর করে।
৬) গ্যাস-অম্বলের প্রকোপ কমাতে বিশেষ ভূমিকা পালন করে।
৭) শরীরের মিনারেল তথা খনিজ পদার্থের চাহিদা পূরণ করে।
৮) মস্তিষ্কে রক্ত প্রবাহ স্বাভাবিক রাখে,যা স্ট্রোক প্রতিরোধ করে।
৯) শরীরের ভিটামিনের চাহিদা পূরণ করে।
এবার জেনে নেই সাদা চিনির (White Sugar) কয়েকটি ক্ষতিকর দিক -
১) যেহেতু পরিশোধনের সময় চিনির মিনারেল বা প্রাকৃতিক খনিজ উপাদান দূর হয়ে যায়। এতে করে মস্তিষ্কে রক্ত প্রবাহ কমে যায়। নিউরন কোষগুলো ধীরে ধীরে মারা যায়। যা স্ট্রোক এর অন্যতম কারন।
২) ভিটামিন সরিয়ে ফেলায় শরীর পুষ্টি উপাদান পায় না।
৩) সাদা চিনিতে অতিরিক্ত পরিমাণে ফ্রূকক্টোজ থাকে। আর ফ্রূকক্টোজ হজম করাতে সাহায্য করে লিভার বা কলিজা। কিন্তু অতিরিক্ত ফ্রূকক্টোজ লিভার হজম করাতে না পারায় লিভারে তা ফ্যাট আকারে জমা হয়। এতে করে লিভার ড্যামেজ বা লিভার নষ্ট হয়ে যায়।
৪) চিনি পরিশোধনে ব্যবহার হয় সালফার আর হাড়ের গুড়ো যা কিডনি বিকলাঙ্গ করে দেয়।
৫) সালফার ইনসুলিন নিঃসরণে প্রধান বাঁধা হয়ে দাঁড়ায়। ফলে শরীরের গ্লুকোজের পরিমাণ বেড়ে যায় এবং ডায়াবেটিস হয়।
সাদা চিনির এত অপকারিতা থাকার কারণেই মূলত সাদা চিনিকে বিশেষজ্ঞরা সাদা বিষ বা
White Poison বলে।
পরিশেষে চলুন, নিজেদের শরীরকে সুস্থ্য রাখার জন্য সাদা চিনি খাওয়া বাদ দিয়ে লাল খাওয়ার অভ্যাস গড়ে তুলি।
সাদা চিনি নাকি লাল চিনি - কোনটি বেশি উপকারী
স্বাস্থ্য কথা